ভূমিকা : লর্ড রিপন ছিলেন একজন উদার, আন্তরিক ও সহানুভূতি সম্পন্ন মানুষ। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসে তিনি তার শাসনকালে নানাবিধ সংস্কার ও আইন প্রণয়নের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তার শাসনামলে তিনি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেন এবং নতুন নতুন সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তার রাজত্বকালের অন্যতম কীর্তি হলো ইলবার্ট বিল নামে একটি আইন প্রণয়ন করা। তার এ কীর্তি তৎকালীন সময়ে কতটুকু ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো :
ইলবার্ট বিল : লর্ড রিপন তার শাসনামলে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করেন এবং নতুন নতুন সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তার শাসনকালীন সময়ের অন্যতম কীর্তি হলো ইলবার্ট বিল নামে একটি আইনের পরিকল্পনা। এ বিলের উদ্দেশ্য ছিল বিচার ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ভারতীয় ও ইউরোপীয়দের মধ্যে যে বৈষম্য ছিল তা দূর করা । লর্ড রিপন বিচার বিভাগের বৈষম্য দূরীকরণের জন্য সচিব ইলবার্টকে একটি বিল প্রণয়নের দায়িত্ব দেন। যার কারণে স্যার ইলবার্ট এর নামানুসারে এ বিলটি ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত। এ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনাধীনে ভারতের বিলে ভারতীয় বিচারকদের ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করার ক্ষমতা দেয়া হয়। এ বিলটি ১৮৮৩ সালে পাস হয়। ইলবার্ট বিল ছিল ভারতীয় রাজনৈতিক অগ্রযাত্রার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেননা এ বিলকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয়দের মনোভাবের প্রেক্ষিতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের গতি প্রসারিত হয়েছিল। এ ঘটনার ফলে ভারতের শিক্ষিত সমাজ বুঝতে পারে ভারতবাসীকে তার নিজ অধিকার নিজেদেরকেই অর্পণ করতে হবে। এ সম্পর্কে এ এম বুচ বলেন যে, ইলবার্ট বিল বিরোধী আন্দোলন ভারতীয়দের তিনটি শিক্ষা দিয়েছিল-বর্ণগত উদ্ধত বিরাজমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত শক্তিশালী বাস্তবতা সকল সংগঠন আশ্চর্যজনক ফল বয়ে আনতে পারে : আর আইন বলে সরকারকে ব্যাপক আন্দোলনের মাধ্যমে অমান্য করা যেতে পারে ৷
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দীর্ঘদিনের বিচার সংক্রান্ত যে জটিলতা বিরাজ করছিল এ বিলের মাধ্যমে তার অনেকটাই দূর হয়েছিল। তাছাড়া ভারতবাসীকে জাতীয়তাবাদের চেতনায় জাগ্ৰত | করার ক্ষেত্রে ইলবার্ট বিল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। তাই | বলা যায়, এটা নিঃসন্দেহে লর্ড রিপনের অনন্য কীর্তি ।