ভূমিকা : ভারতবর্ষের শাসনতন্ত্রের ইতিহাসে গোলটেবিল বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারতবর্ষ নতুন ইতিহাসের দিকে গমন করেন। বিট্রিশ কতৃর্ক সাইমন কমিশন যখন ভারতের মানুষকে খুশি করতে পারেনি তখন বিট্রিশ সরকার কতৃক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই অভিবেশনের মূল লক্ষ ছিল বারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের রাস্তা তৈরি করা। পাশাপাশি ভারতবর্ষের জন্য একটি সর্বসম্মত সংবিধান রচনা করা।
গোল টেবিল বৈঠকের গুরুত্ব : ১৯৩০-৩২ সালের মধ্যে তিনটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুর্ভাগ্যবসত কোনো অধিবেশনই কার্যকরী কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। T প্রথম গোলটেবিল বৈঠকে কংগ্রেস অংশগ্রহণ না করায় অধিবেশেনটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। পর্যবসিত হয়। কংগ্রেস ভারতে অসহযোগ আন্দোলনের নেমে যায়। কংগ্রেস প্রথমে বিক্ষেভ বিলেতি দ্রব্য বর্জনের মাধ্যমে অসহযোগ আন্দোলন করতে থাকে। দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে কংগ্রেস অংশ গ্রহ করলেও সফলতার কোনো আলো দেখা যায়নি। ঠিক এভাবেই তৃতীয় গোলটেবির বৈঠকের ব্যর্থ হয়ে যায়। তারপরও গোলটেবিল বৈঠকের পুরোপুরি অসফল বলা যবে না। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের ভিন্নধর্মী দাবিদাওয়ার আন্দোলনে ভারতে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এর ফলে ভারতবর্ষের রাজনীতি তথা ব্রিটিশ শাসন হুমকির মুখে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে ভারতে রাজনৈতিক সংকট দূর করতে চেয়েছিল। হিন্দু ও মুসলমানদের পাশাপাশি অবস্থানের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার একটি সমাধানের রাস্তা বের করতে চেয়েছিল। হিন্দু ও মুসলমানদের দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য সংবিধান প্রণয়ন উদ্বুদ্ধ হয়। ১৯৩০-৩২ সালের গোলটেবিল বৈঠকের প্রভাব লক্ষ করা যায়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন প্রণীত হয়। এই দিক দিয়ে বিবেচনা করলে গোলটেবিল বৈঠকের গুরুত্ব সুদূরপ্রসারী ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতবর্ষের শাসনতন্ত্র প্রণয়নে গোলটেবিল বৈঠকের গুরুত্ব ছিল অত্যধিক। হিন্দু ও মুসলমানদের বিভন্ন দাবিদাওয়ার ভিতিত্তে গোলটেবিল বৈঠকের অধিবেশন পরিচালিত হয়। যদিও অধিবেশন সফল হয়নি তবুও ব্রিটিশ সরকার হিন্দু ও মুসলমানদের দাবিদাওয়া সম্পর্কে জানতে পারে । এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন পাশ হয় । যে আইনে এই অধিবেশনের দাবিদাওয়া স্থান পায়।