১৮৬১-১৮৬৫ সালের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর আমেরিকার পুনর্গঠন প্রশ্নে ফেডারেল ইউনিয়নকে সংগঠিত করাসহ উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্নে যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছিল তা সমাধান করা সহজবোধ্য ছিল না। তবুও আব্রাহাম লিংকন এ্যান্ড্রু জনসন এবং কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তার মধ্যে র্যাডিকেল পরিবর্তন অন্যতম। কিন্তু র্যাডিকেল পুনর্গঠনটি প্রথমদিকে কিছু আশা জাগিয়ে আবির্ভূত হলেও পরবর্তী সময়ে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আর এই র্যাডিকেল পুনর্গঠন ব্যর্থতার মধ্যে ব্লাক ফ্রাইডে উল্লেখযোগ্য ।
ব্লাক ফ্রাইডে : র্যাডিকেল পুনর্গঠন ব্যর্থ হবার একটি বড় কারণ হলো প্রশাসনের সীমাহীন দুর্নীতি। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সুবিধাবাদী শ্রেণিটি দু'অঞ্চলে এ ক্রান্তিলগ্নে সুযোগ গ্রহণ করে। যে যেভাবে পেরেছে সে সেভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিত্তশালী হয়ে উঠে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, ফ্লোরিডার ১৮৬৯ সালের সরকারি প্রকাশনার খরচ ১৮৬০ সালের সবগুলো রাজ্যের খরচকে ছাড়িয়ে যায়। দক্ষিণ ক্যারোলাইনার আইনপরিষদ একটি সেখানে পরিষদ সদস্যদের জন্য রাজ্যসরকার একটি রেস্টুরেন্ট ও বার চালায়। তার খরচ দাঁড়ায় এক সেশনেই ১,২৫,০০০ ডলার। এছাড়া লুইজিয়ানার তরুণ গভর্নর ওয়ারমথ তার চার বছরের শাসনকালে অর্ধ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ গড়ে তোলে । এগুলো তিনি করেছিলেন রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি এবং স্কুল ফান্ডের বিনিময়ে। সেই সাথে সরকার এক প্রশাসনের মধ্যে থেকে ১৮৬৯ সালে সরকারের স্বর্ণনীতি সম্পর্কে মিথ্যা গুজব ছড়ায়। এ গুজব মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। ফলে মাত্র একদিনে বহু মানুষ একবারে নিঃস্ব হয়ে যায়। ১৯৬৯ সালের এই দিনটি ব্লাক ফ্রাইডে নামে পরিচিত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যুদ্ধপরবর্তী বিধ্বস্ত দক্ষিণাঞ্চলের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে র্যাডিকেলদের পরিকল্পনা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা সংকটের মধ্য পড়ে। আর এই সংকটের মধ্য ১৮৬৯ সালের ব্লাক ফ্রাইডে অন্যতম। এর ফলে র্যাডিকেল পুনর্গঠন অকার্যকর হয়ে পড়ে।