ভূমিকা : ১৯৪২ সালের “ভারত ছাড়” আন্দোলন বা আগস্ট আন্দোলন ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পূর্বে সংঘটিত অসহযোগ আন্দোলন কিংবা আইন অমান্য আন্দোলনের তুলনায় “ভারত ছাড়” আন্দোলনের প্রস্ততি ছিল আরও ব্যাপক। ক্রিপস মিশন ব্যর্থ হলে ভারতবাসীর মধ্যে প্রবল হতাশা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং জাপানের অভাবনীয় সাফল্যের ফলে ভারতের নিরাপত্তা সম্পর্কে ভারতবাসীর মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ব্রিটিশ সরকারের সাথে আলোচনা ব্যর্থ হলে গান্ধীজি পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে “ভারত ছাড়” আন্দোলন এর ঘোষণা দেন।
'ভারত ছাড়' আন্দোলন : ১৯৪২ সালে ২৬ এপ্রিল গান্ধীজি ‘হরিজন' পত্রিকায় প্রথম ‘ভারত ছাড়' পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন এবং ব্রিটিশ সরকারকে এ মর্মে অনুরোধ জানান যে, তারা স যেন ভারতের স্বার্থে ভারতের দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়ে ভারত থেকে চলে যান। কিন্তু তদানীন্তন পরিস্থিতিতে গান্ধীজি এ প্রস্তাব র সম্বন্ধে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের অনেকে দ্বিধাগ্রস্ত হন। এ অবস্থায় র্চ গান্ধীজি প্রস্তাব করেন যে, ভারতের কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে র ব্রিটিশ সেনানিবাস থাকতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতা ত ভারতীয়দের হাতে থাকা চাই । গান্ধীজি স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত করেন
যে, যদি তার এ প্রস্তাব কংগ্রেস গ্রহণ না করে, তাহলে তিনি কংগ্রেস ত্যাগ করবেন এবং স্বতন্ত্রভাবে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলবেন। ১৯৪২ সালের ৮ আগস্ট জাতীয় কংগ্রেসের মুম্বাই অধিবেশনে ঐতিহাসিক 'ভারত ছাড়” প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এ প্রস্তাবে বলা হয় যে, ভারতকে স্বাধীন করা হলে ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি সাময়িক সরকার গঠন করা পর্যায় হবে এবং এ সরকার ভারতের সকল শ্রেণির গ্রহণযোগ্য একটি আলোচ শাসনতন্ত্র রচনা করবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, 'ভারত ছাড়’ আন্দোলন | ছিল ভারতবাসীর পুঞ্জীভূত ক্ষোভের সর্বাত্মক ও স্বতঃস্ফূর্ত | প্রতিফলন। 'ভারত ছাড়' আন্দোলনের মাধ্যমে যে জন-বিস্ফোরণ ব্যর্থ হয়। সৃষ্টি হয়েছিল তাতে ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করতে পারে যে, সতর্কবা= ভারতীয়দের স্বাধীনতা প্রদান করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই ।