ভূমিকা : উনিশ শতকের শেষের দিকে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। এই আন্দোলন শিক্ষিত সচেতন সমাজ ছাড়াও সাধারণ মানুষকে খুবই আকৃষ্ট করেছিল। আর এ চেতনাকে জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। ঠিক এই সময় ১৮৭৮ সালে লর্ড লিটন ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট জারি করেন। এটি সংবাদপত্র আইন নামেও পরিচিত |
ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট : ভাইরসয় লর্ড লিটনের শাসনকাল সর্বাধিক বিতর্কিত তার ১৮৭৮ সালের ১৪ মার্চ দেশীয় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য প্রণীত ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট এর জন্য। ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্টের উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রচারণা বন্ধ করা। লর্ড লিটন দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রকে কুচক্রী বাজে লেখকের প্রকাশ রাষ্ট্রদ্রোহী প্রচারনা বলে অভিযুক্ত করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, অধিকাংশ সংবাদপত্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্রিটিশ রাজের পতন ঘটানো। যেসব পত্রিকা সরকারকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল তা হলো সোম প্রকাশ, সুলভ সমাচার, হালি শহর পত্রিকা, অমৃত বাজার পত্রিকা, ভারত মিহির, ঢাকা প্রকাশ, সাধারণী ও ভারত সংস্কারক। এর সবগুলো পত্রিকাকে রাজদ্রোহমূলক আন্দোলন পরিচালনার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এ আটনোর আওতায় অনেক সংবাদপত্রকে জরিমানা এবং সম্পাদকদের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল সংগঠন এই পদক্ষেপে প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে যাইহোক পরবর্তী ভাইসরয় লর্ড রিপন উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শেষ পর্যন্ত আইনটি প্রত্যাহার করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয়দের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বিস্তারের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রগুলো গুরুত্বপূর্ণ পালন করেছিল। কিন্তু লর্ড লিটনের সংবাদপত্র আইন পাশ ছিল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের উপর বড় ধরনের আঘাত। তারপর ভারতীয় জনগণই আইনের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ।