ভূমিকা : ১৯১৯ সালের ভারত ব্যর্থ হওয়ায় একটি সর্বসম্মত শাসনতন্ত্র প্রণয়নের লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগ ও ভারতীয় নেতৃবৃন্দের নানারকম প্রস্তাবের আলোকে ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন প্রবর্তিত হয়। তবে এ আইন কার্যকর না হওয়ায় ভারতীয়দের মধ্যে জনঅসন্তোষ তীব্র হয়। শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালে লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনকে বড়লাটের দায়িত্ব দেন এবং তিনি তার দায়িত্বে যে পরিকল্পনা করেন তাই মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনা।
→ মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনা : ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের শুরু থেকেই বেশ জনসন্তোষ দেখা যায় এবং ভারতীয়রা প্রায়ই ব্রিটিশ সরকারের বিপক্ষে আন্দোলন করতো। এসব সমস্যা বা আন্দোলন থামিয়ে রাখার জন্য নানা নীতিমালা প্রণয়ন করতেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। এমতাবস্থায় ভারতের শেষ ভাইসরয় হিসেবে ১৯৪৭ সালের ২২ মার্চ নিযুক্ত করা হয়। লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই হস্তান্তরের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য কর্মসূচি বা পরিকল্পনা হাতে নেয়। ভারতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় অকেজো ছিল কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের দ্বিধাবিভক্তির কারণে। সেসময় দেশের নানা জায়গায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগেই থাকত। ফলে একটা খুবই স্বাভাবিক হয় যে ভারতের অখণ্ডতা আর ধরে রাখা সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় দেশের রাজনৈতিক সংকট ও জনঅসন্তোষ দূর করার জন্য ভারতের জনগণের ইচ্ছাকে সামনে রেখে ভারত বিভক্তির জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে মাউন্ট ব্যাটেন এক পরিকল্পনা পেশ করেন। যেই পরিকল্পনার কথা ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালের ৩ জুন প্রকাশ করেন, আর এটাই ৩ জুন পরিকল্পনা বা মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনা নামে খ্যাত। এটা মূলত ভারত বিভক্তির অন্যতম কারণ ছিল ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৪৬ সালের মন্ত্রিমিশনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে যে দ্বিধাবিভক্তির তৈরি হয় তা ভারত বিভক্তিকে ত্বরান্বিত করে। মূলত ভারতবর্ষের রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা • নিরসনে ৩ জুন পরিকল্পনা বা লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনা ছিল একটা সুস্পষ্ট নির্দেশনা। আর এ মাউন্ট ব্যাটেন পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই পরবর্তিতে ভারত বিভক্তি হয় ।