ভূমিকা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হবার পর রাশিয়া আন্ত র্জাতিক স্বীকৃতির জন্য যখন সারা বিশ্বব্যাপী তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, তখন জার্মানিই প্রথম তাদের দিকে মৈত্রীর জন্য এগিয়ে আসে। ১৯২২ সালে রুশ-জার্মান র্যাপেলো নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে যার মাধ্যমে দুই ভার্সাই বিরোধী রাষ্ট্রের মধ্যে জোট সৃষ্টি হয়। এই চুক্তির ফলে পশ্চিমা শক্তি নড়েচড়ে বসে। এতোদিন রাশিয়াকে পাত্তা না দেওয়া পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে তাদের বিবেচনায় আনতে বাধ্য হয়।
র্যাপেলো চুক্তি : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বিপর্যস্ত অবস্থার সুযোগে সোভিয়েত রাশিয়া নিজের অবস্থানকে শক্ত করার জন্য ইউরোপের মধ্যে তার সাম্যবাদী আদর্শ প্রচারের চেষ্টা করে । যার ফলে ইউরোপীয় সমগ্র শক্তি একযোগে রাশিয়ার উপর আক্রমণ চালাতে থাকে এবং সোভিয়েত সরকারকে উৎখাত করতে রাশিয়ার বিপ্লব বিরোধী বাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়। ফলে সোভিয়েত সরকার দ্বৈত সমস্যার মুখোমুখি হয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্য সফল না হওয়ার কারণে অর্থাৎ পশ্চিমাদের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়, তখন রাশিয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা ছিল পশ্চিমাদের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। ১৯২২ সালের ১৫ এপ্রিল রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিচেরিন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াল্টার ব্যার্থেনিউ-এর সাথে র্যাপেলো চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তির মাধ্যমে দুই ভার্সাই চুক্তি বিরোধী শক্তি জোটবদ্ধ হয়।
র্যাপেলো চুক্তির শর্তাবলি :
১. সোভিয়েত রাশিয়া তার দেশে অর্থাৎ নিজ ভূমিতে জার্মানির সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি অস্ত্র উৎপাদনেরও সুযোগ দেবে।
২. রাশিয়া ও জার্মানি দুদেশ পরসাপরকে বাণিজ্যিক সুবিধার পাশাপাশি কূটনৈতিক স্বীঅকৃতি দেবে।
এই চুক্তি পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবর্তন করতে বাধ্য থাকবে। এই চুক্তির ফলাফল বিচার করলে এর তাৎপর্য অনুধাবন করা যায় । এই চুক্তির কিছু ফলাফল নিম্নে তুলে ধরা হলো :
১. এই চুক্তির ফলে রুশ-জার্মান বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটে। ২. আন্তর্জাতিকভাবে রাশিয়ার গুরুত্ব বেড়ে যায় ।
৩. পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষভাবে ব্রিটেন ও ফ্রান্স এতে শঙ্কিত ওচিন্তিত হয়ে পড়ে।
৪. ইউরোপের রাজনীতিতে উভয় দেশের শক্তি বেড়ে যায়।
৫. এই চুক্তির ফলে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি কূটনৈতিক সমীহ করে চলতে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের বিপর্যস্ত অবস্থার সুযোগে সোভিয়েত রাশিয়া নিজের অবস্থানকে শক্ত করার জন্য ইউরোপের মধ্যে তার সাম্যবাদী আদর্শ প্রচারের চেষ্টা করে। কিন্তু রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতির উদ্দেশ্য সফল না হওয়ার কারণে রাশিয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা ছিল পশ্চিমাদের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। ১৯২২ সালের ১৫ এপ্রিল রাশিয়া ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী র্যাপেলো চুক্তি স্বাক্ষর করে।