ভূমিকা : বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ১৯১৭ সালের নভেম্বরে গঠিত হয়। লেনিন ১৪টি সাম্রাজ্যবাদী দেশের জোটবদ্ধ নৃংশস আক্রমণ প্রতিহত করে। পরবর্তীতে সোভিয়েত | পালন নেতৃত্বে। নৃশংস হিটলারের অপরাজেয় নাৎসি বাহিনীকে ইউনিয়ন একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠে স্ট্যালিনের স্বাধীন পরাজিত করতে সমর্থ হয় অজেয় লালফৌজ বাহিনী দুই কোটি নারীর সোভিয়েতবাসীর মৃত্যু সত্ত্বেও। স্ট্যালিন সোভিয়েত ইউনিয়নের সোভিয়েত ইউনিয়নকে নতুনভাবে গড়ে তোলে স্ট্যালিনের পুনর্গঠনে মনোযোগী হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে। ।
→ রাশিয়ার সমাজতন্ত্র সংহতকরণে যোসেফ স্ট্যালিনের সংকি কৃতিত্বসমূহ নিম্নে বিশ্লেষণ করা হলো : কৃতিত্বসমূহ : রাশিয়ার সমাজতন্ত্র সংহতকরণে যোসেফ স্ট্যালিনের
১. গণতান্ত্রিক অধিকার প্রদান : জনগণের কমিউনিজম শিক্ষ গড়ার সহযোগী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কমিউনিস্ট পার্টিকে। কর সংবিধানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত নাগরিকের বিস্তৃত করা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রদান করা হয়। তাছাড়া বিবেকের স্বাধীনতা, | পদ বাকস্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতাও প্রদান করা হয় ।
২. সোভিয়েত জাতিসমূহের সমানাধিকার : সমান সমান আ ইউনিয়ন প্রজাতন্ত্রগুলোর স্বেচ্ছামিলনী হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর প্রজাতন্ত্র ১৯২২ সালে সোভিয়েত গঠনের সময়ে ৪টি ছিল না কিন্তু ১৯৩৬ সালে ১১টি ছিল। এ কারণে প্রত্যেক প্রজাতন্ত্রের ক মানুষকে সমঅধিকার দেওয়া অত্যাবশ্যক হয়ে উঠে। ধারণা করা হয় লেনিনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্ট্যালিন অবশ্যই এ কাজ | - করেছিলেন । তাছাড়া বহু জাতির রাষ্ট্র হলো সোভিয়েত সংবিধানে বলা হয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমস্ত জাতির অধিকার সমান সমান, তারা থাকে ভ্রাতৃত্বসুলভ বন্ধুত্বের মধ্যে ।
৩. রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা : বার্ধক্য কিংবা অসুস্থতার দরুণ 1 যেসব নাগরিকের কর্মহানি ঘটবে তাদের ভরণপোষণের ভার চিকিৎসাকালীন নেবে রাষ্ট্র এ সম্পর্কে সংবিধানে বলা আছে। মজুরির ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ অবধি মজুরি লাভ করার অধিকার পায় শ্রমিকেরা। তাছাড়া রাষ্ট্রের কাছ থেকে অসুস্থরা চিকিৎসা সেবা লাভ করবে।
৪. জনগণের দায়দায়িত্ব : সোভিয়েত ভূমিকে রক্ষা করার প্রত্যেকের পবিত্র কর্তব্য এটি সংবিধানে বলা হয়েছে। তাছাড়া সংবিধানে বলা হয়, সোভিয়েত জনগণের বিভিন্ন দায়-দায়িত্ব পালনের কথা। আরো বলা হয়, রাষ্ট্রীয় আইনকানুন মেনে চলা, দেশের সম্পদের প্রতি সোভিয়েত ইউনিয়নের সমস্ত মানুষের মালিকানার মনোভাব, শ্রম শৃঙ্খলা মেনে চলা এবং সাধারণের . সম্পত্তি বজায় রাখার কথাও।
৫.ধর্মীয় স্বাধীনতা : বলা হয়েছে নিজেদের ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবে সকল সোভিয়েত নাগরিক। কেননা ধর্মীয়, স্বাধীনতা সংবিধানে প্রদান করা হয় ।
৬. নারীর অধিকার প্রদান : সোভিয়েত ইউনিয়নে সর্বক্ষেত্রেই নারীর অধিকার পুরুষের সমান এবং এটি দৃঢ়তাসহকারে সংবিধানে পুনর্ঘোষণা করা হয়েছে। কেননা নারীর অধিকার প্রদানই হলো ১৯৩৬ সালের সংবিধানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারীর অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা হয় এ. সংবিধানে। তাই সোভিয়েতের ইতিহাসে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় জোর দেয়ার কারণে এ সংবিধানের গুরুত্ব অপরিহার্য
৭. শিক্ষার অধিকার : সকল সোভিয়েত নাগরিকের শিক্ষা লাভের অধিকার স্বীকৃত হয় ১৯৩৬ সালের সংবিধানে। সাধারণ শিক্ষা বিদ্যালয়, বিশেষিত মাধ্যমিক ও উচ্চতর শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। তাছাড়া বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তাই সংবিধানে উল্লিখিত এই অধিকারটি নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
৮. রিপাবলিকগুলোর স্বাধীন সৈন্য : প্রতিটি রিপাবলিককে স্বাধীন সৈন্য রাখার অনুমতি প্রদান করা হয় সংবিধানে। দেশপ্রেমী ও আত্মত্যাগী ছিলেন এ সৈন্যরা। তাই এদেরকে বলা হয় Real Army.
৯. যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ পাওয়ার অধিকার : সকল নাগরিককে যোগ্যতা অনুসারে কাজ পাওয়ার অধিকারকে নিশ্চিত করা হয় ১৯৩৬ সালের সংবিধান অনুযায়ী। সাংবিধানিক স্বীকৃতি অর্জন করা হয় সোভিয়েত ইউনিয়নে নাগরিকের কাজ করার অধিকারের মাধ্যমে। কাজ করার অধিকার বলতে সোভিয়েত ইউনিয়নে বেকারদের কাজে নিয়োজিত করাকে বোঝায়। তাছাড়া কাজের পরিমাণ আর গুণের উপর মজুরি নির্ভর করে।
১০. শ্রমজীবী মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থা : সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশেষ অনুগ্রহশীল শ্রমজীবী জনগণের অবকাশ অবসরের ব্যবস্থা করার ব্যাপারে। বেতনসমেত ছুটি, সুদৃঢ় বিস্তৃত জালের মতো সব বিশ্রামাগার, স্বাস্থ্য নিবাস এবং কোর্ডি হাউস প্রভৃতি সংবিধানের বিশ্রাম অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া মানুষ এই সব জায়গায় ছুটি কাটাতে পারে ।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যয়, স্ট্যালিনের পুনর্গঠন নীতি পুরোপুরি বিধ্বস্ত রাশিয়াকে পুনরুজ্জীবন প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ সোভিয়েতের বিভিন্ন সমস্যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে দেখা যায় তিনি ছিলেন জনকল্যাণকামী। ফলশ্রুতিতে সমগ্র বিশ্বে সমাজতন্ত্রের জয়যাত্রা শুরু হয় তার নেতৃত্বে। এ কারণেই সাধারণ জনগণ তাদের দেশের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধ করে। সমগ্র বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় করে তোলে তাদের দেশপ্রেমকে ।