ভূমিকা : ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতে যে সকল গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় আগমন করেছিল তাদের মধ্যে লর্ড লিটন অন্যতম। তিনি ১৮৭৬ সাল থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় ছিলেন । তিনি একজন কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন। → লর্ড লিটনের পরিচয় : নিম্নে লর্ড লিটনের পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. জন্ম পরিচয় : লর্ড লিটন ১৮৩১ সালের ৮ নভেম্বর ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরোনাম ছিল বরাট লিটন। তবে তিনি লর্ড লিটন নামে পরিচিত ছিলেন। তার পিতার নাম ছিল এডওয়ার্ড বুলওয়ার লিটন
২. প্রাথমিক ও কর্মজীবন : লর্ড লিটন হ্যারে স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভ করেন। তিনি জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একজন পন্ডিত ও সুবক্ত ছিলেন। লর্ড লিটন শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করে কূটনৈতিকদের সদস্য হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি ইউরোপের বেশ কয়েকটি রাজধানীতে কর্মরত ছিলেন। লিটন একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সাহিত্যে যথেষ্ট অবদান রাখেন ।
৩. ভারতে আগমন : লর্ড নর্থব্রুবের পর লর্ড লিটন ভারতের ভাইসরয় নিযুক্ত হয়ে ভারতে আগমন করেন। তিনি ১৮৭৬ সালে ভারতে এসেছিলেন।
৪. লিটনের শাসনকাল : ভারতে লর্ড লিটনের শাসনকাল ছিল এক. উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। তিনি ভারতে এক রাজকীয় জীবন কাটিয়েছেন। তার রাজত্বকালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রয়্যাল টাইটেল অ্যাক্ট পাশ হয়েছিল। এই আইনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রানিকে ভারত সাম্রাঞ্জী বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। লর্ড লিটন রানিকে ভারত সাম্রাঞ্জী ঘোষণা উপলক্ষে বিরাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ।
৫. শাসন নীতি : লর্ড লিটন একজন দক্ষ শাসক ছিলেন। তবে তিনি শাসনকার্য পরিচালনার জন্য কঠোর নীতি অবলম্বন করেনি। তিনি শাসনব্যবস্থায় মোটামুটি স্থিতিশীল নীতি গ্রহণ করেন। তারপরও লর্ড লিটন একজন সাম্রাজ্যবাদী শাসক ছিলেন।
৬. মৃত্যু : লর্ড লিটন ১৮৯১ সালের ২৪ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লর্ড লিটন একজন সুদক্ষ শাসক ছিলেন। তিনি যথেষ্ট সংস্করমনা ছিলেন। তিনি ভারতবাসীর জন্য যেসব নীতি গ্রহণ করেছিলেন তার সবকিছুই যে ভারতবাসীর জন্য কল্যাণকর ছিল না। তার সমস্ত কাজকর্ম বিচার বিশ্লেষণ করলে তাকে একেবারে ভালো ও একেবারে খারাপ শাসক বলা যায় না। ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে তার শাসনকাল একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।