ভূমিকা : ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরা মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেননি। তবে ভারতীয় হিন্দুরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্রিটিশ শাসনকে স্বাগত | জানায় এবং সমাজে নিজেদের স্থান করে নিতে সক্ষম হন। এক পর্যায়ে দেখা যায়, সকল দিক থেকে ভারতীয় হিন্দুরা স্থান করে নেয় এবং মুসলমানরা অবহেলিত বলে পরিগণিত হয়। হিন্দুদের সংগঠন বলে খ্যাত কংগ্রেস প্রথম পর্যায়ে ছিল অসাম্প্রদায়িক সংগঠন । কিন্তু পরে কংগ্রেসের কয়েকজন উগ্রপন্থি নেতার জন্য তা সাম্প্রদায়িক সংগঠনে পরিণত হয়। তাই ভারতীয় মুসলমানরা নিজেদের একটি কথা বলার মাধ্যম তৈরি করার জন্য প্রচেষ্টা চালান ।
গঠিত হলে হিন্দুরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে, তাই নতুন শাসনতন্ত্রে মুসলমানরা তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বড়লাট মিন্টোর কাছে প্রতিনিধি দল পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন । তাই মহসিন-উল-মূলক কাল বিলম্ব না করে বড়লাট লর্ড মিন্টোর সাথে সাক্ষাতের জন্য একটি প্রতিনিধি দল গঠন করেন। এছাড়া আলীগড়ের অধ্যক্ষ Archibold এর সহযোগিতায় একটি স্মারকলিপি রচনা করেন । মহামান্য তৃতীয় আগা খানকে প্রতিনিধি দলের নেতা নির্বাচন করা হয়। ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর আগা | খানের নৃেতত্বে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল সিমলায় বড়লাট মিন্টোর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। যা ইতিহাসে সিমলা ডেপুটেশন নামে খ্যাত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলমানদের স্বার্থগত বিচারে সিমলা ডেপুটেশনকে এক মাইলফলক বলা যায়। কারণ → সিমলা ডেপুটেশন : ভারতবর্ষের দায়িত্ব নিয়ে লর্ড মর্লির এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ভারতীয় মুসলমানরা দীর্ঘদিন থেকে ঘোষণায় শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের কথা জানতে পেরে শঙ্কিত হয়ে তাদের যে বৈষম্যের পাহাড় এর অভিজ্ঞতা তা তুলে ধরে পড়েন । কারণ তাদের মতে, ভারতে নির্বাচনের মাধ্যমে আইনসভা | নিজেদের স্বার্থ আদায়ের পথ সুগম করতে সক্ষম হন।