ভূমিকা : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুরস্কে অটোম্যান সাম্রাজ্যের শাসন চলছিল। তবে দীর্ঘ দিন ধরে তুর্কি সাম্রাজ্য খিলাফতের অধীনে থাকায় পশ্চিমা দেশসমূহ তথা ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও অন্যান্য দেশের সাথে দ্বন্দ্ব চলছিল। কারণ অর্থনৈতিক ও সামরিক এবং উপনিবেশগত দিক থেকে তুর্কি থেকে তুর্কি সাম্রাজ্য ঔপনিবেশিক শক্তি ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের বিরোধী ছিল।
→ সেভার্স চুক্তি : সেভার্স চুক্তি আসলে কোনো চুক্তি ছিল না। এটা ছিল তুর্কি সাম্রাজ্যের জন্য কিছু অপমানজনক শর্ত। যা মিত্রশক্তি যুদ্ধে পরাজিত তুর্কি সাম্রাজ্যের উপর চাপিয়ে দেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত সকল দেশের সাথে মিত্রশক্তি ভিন্ন ভিন্ন চুক্তি করে। আর এর সূচনা হয় ১৯১৯ সালের ২৮ জুন ভার্সাই চুক্তির মধ্য দিয়ে। যুদ্ধে বিজয়ী মিত্রশক্তি তুরস্ক অবরোধ করে সন্ধির এবং প্যারিস শান্তি সম্মেলনে যোগদানের জন্য সুলতানকে। আমন্ত্রণ জানায়। সুলতান ফরিদ পাশা, তৌফিক পাশার নেতৃত্বে ব্যবস্থ একটা প্রতিনিধি দল প্রেরণ করে। মিত্রশক্তি তুরস্কের সাথে সন্ধির জন্য ১৯২০ সালের ২০ এপ্রিলে একটা চুক্তি প্রস্তুত করে এবং ঐ বছরের ১১ মে এটা সুলতানের নিকট প্রেরণ করে। সুলতান একটা বৈঠক আহ্বান করলে তুরস্কের জাতীয় উচ্চ পরিষদ অপমানজক ও তুরস্কের জন্য ক্ষতিকর এ শর্তের বিরোধিতা করে। তবে ইস্তাম্বুলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বেশিরভাগ এ সন্ধির পক্ষে ভোট দেয়। ফলে বার্নে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূত রেসাত এ নেতৃত্বে গঠিত মিশন প্যারিসে যায়। এবং ১৯২০ সালের ১০ আগস্ট সেভার্সে মিত্রশক্তি ও তুর্কি সুলতানের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সেভার্স সন্ধি আসলে কোনো সমঝোতা চুক্তি ছিল না। এটা ছিল বিজয়ী মিত্রশক্তি কর্তৃক পরাজিত তুর্কি সাম্রাজ্যের জন্য চরম অপমানজনক কিছু শর্ত যা তুর্কি সাম্রাজ্যকে খণ্ড-বিখণ্ড করে ফেলে ।