ভূমিকা : সরকারি প্রশাসন যন্ত্র এবং দলীয় আমলাদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল স্ট্যালিনের কারণ তিনি CPSU এর সম্পাদক ছিলেন। স্বরাষ্ট্র বিভাগ ও পুলিশ বিভাগের কর্তা হিসেবে স্ট্যালিন দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করে বিশেষ করে লেনিনের মৃত্যুর পর। তিনি বলশেভিক দলের অন্যতম নেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন এবং তিনি কৃষক শ্রেণি থেকে এসে দলের কর্মী হিসেবে উঁচু পদে আসেন।
স্ট্যালিনের এক রাষ্ট্র সাম্যবাদ : জর্জিয়া প্রদেশে এক দরিত্র চর্মকারের গৃহে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে জন্ম হয়েছিল স্ট্যালিনের। তিনি তাঁর ছাত্রজীবন গির্জা বিদ্যালয়ে কাটান কারণ তিনি যথেষ্ট উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন না। একদম প্রথম থেকেই রুশ কমিউনিস্ট দলের একজন সাহসী ও সক্রিয় সদস্য ছিলেন তিনি। স্ট্যালিন ও ট্রটস্কির মধ্যকার দ্বন্দ্ব শুরু হয় ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পর থেকেই। স্ট্যালিন সাম্যবাদের বিকাশ সম্ভব এই মর্মে একটি থিসিস রচনা করেন ট্রটস্কির বক্তব্যের প্রতিবাদে। তার বক্তব্য অনুসারে :
১. সোভিয়েত রাশিয়ার সমাজতন্ত্রকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে রাশিয়াকে শিল্পবিপ্লবের পিতৃভূমি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ।
২. পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকে সফল করে গড়ে তোলার জন্য রাশিয়ার বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। এই সাহায্য পাওয়া যাবে না যদি শিল্পবিপ্লবের কথা ভাবা হয় ।
৩. সোভিয়েত রাশিয়াকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা দরকার সোভিয়েত বিপ্লবের ভিত দৃঢ় করার লক্ষ্যে।
৪. সোভিয়েত রাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হলো সংগঠন। সংগঠন গড়ে তুলতে না পারলে সোভিয়েত বিপ্লবের ক্ষতি হবে বলে তিনি বলেন।
৫. তিনি যথেষ্ট তাগিদ দিয়েছিলেন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার উপরও যেন সোভিয়েত বিপ্লব সচল হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্ট্যালিনের সম্পূর্ণভাবে তাঁর নিজের একটা স্বতন্ত্র মতবাদ ছিল এক রাষ্ট্রে সাম্যবাদ । তিনি এ সাম্যবাদ নীতি আরোপ করেন প্রধানত ট্রটস্কির সাথে তার দ্বন্দ্বের প্রতিবাদস্বরূপ। পরবর্তীতে সোভিয়েত বিপ্লবের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে তাঁর এ নীতি। সমাজতন্ত্রকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করে স্ট্যালিনের এই নীতি । পরবর্তী সময়ে তা একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও।