ভূমিকা : ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে তিনটি দল অংশগ্রহণ করেছিল তার মধ্যে মুসলিম লীগ ও কৃষক প্রজাপার্টি অন্যতম। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলীম লীগ পার্টির প্রধান ছিলেন। অন্যদিকে শেরে বাংলা এ. কে ফজলুল হক কৃষক প্রজা পার্টির প্রধান ছিলেন। একে ফজলুল হক খুব জনপ্রিয় ছিলেন। তার জনপ্রিয়তাই ছিল কৃষক প্রজাপার্টির মূলধন |
অপরদিকে মুসলিম লীগ ছিল জমিদার ও ব্যবসায়ী শ্রেণির প্রতিষ্ঠান । সাধারণ মানুষের সাথে তাদের তেমন সম্পর্ক ছিল না। ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম
→ ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব : নিম্নে ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরা হলো :
১. জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের অধিকার লাভ : ১৯৩৭ থম সালের নির্বাচনে জনগণ প্রথম প্রত্যক্ষ ভোটপ্রদানের অধিকার লাভ করেন। এর পূর্বে কখনো এভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটপ্রদানের অধিকার লাভ করার জন্য ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের গুরুত্ব অত্যধিক।
২. কৃষক প্রজা পার্টির জনপ্রিয়তা : ১৯৩৭ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল । কারণ সাধারণ জনগণ একে ফজলুল হককে খুব পছন্দ করতেন। এ পার্টির উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। কৃষক প্রজাপার্টির অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণে অনেক হিন্দু নেতা ও তার দলকে সমর্থন করেছিল।
৩. নতুন নতুন রাজনৈতিক আদর্শ : ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে যেসব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছিল তারা নতুন নতুন রাজনৈতিক আদর্শ জনগণের কাছে প্রকাশ করেছিল যা হক তৎকালীন রাজনৈতিক পরিবেশকে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছিল তা প্রকৃতপক্ষে অনেক অর্থবহ ছিল ।
৪. হিন্দু মুসলিম ঐক্য : ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে হিন্দু হয়। মুসলিম ঐক্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। কারণ এই ধারা নির্বাচনের পরে যেসব মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল তাতে মুখ্যমন্ত্ৰী সভা ছাড়া ১০ জনের মধ্যে ৫ জন হিন্দু মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। এতে করে হিন্দু মুসলিম ঐক্যের অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছিল । এদিক থেকে এই নির্বাচনের গুরুত্ব অধিক ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৩৭ সালের নির্বাচনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টি ও মুসলিমের মধ্যে কোয়ালিশন সরকার গঠিত বরে হয়েছিল। একে ফজলুল হক অত্যন্ত সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করছিল। কিন্তু মুসলিম লীগের প্রধান মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর যে সাথে কিছু বিষয় নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হলে কোয়ালিশন টকে সরকার ভেঙ্গে যায়। ১৯৩৭ সালের নির্বাচন বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।